‘দুর্বল মানসিকতায়’ ভয় ধরানো জয়

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : শনিবার, ৪ অক্টোবর, ২০২৫

 

বিনা উইকেটে ১০৯ থেকে আচমকা সেই স্কোর পরিণত হলো ১১৮ রানে। সহজ জয়ের হাতছানি থেকে এক পর্যায়ে দেখা দিল হারের শঙ্কা। তবে শেষ পর্যন্ত তা আর হয়নি। রিশাদ হোসেন ও নুরুল হাসান সোহানের গুরুত্বপূর্ণ জুটিতে ম্যাচ জিতে নিল বাংলাদেশ। গতপরশু রাতে শারজায় সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে আফগানিস্তানকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে জাকের আলী অনিকের দল। ১৫২ রানের লক্ষ্য ৮ বল আগেই পেরিয়ে জিতেছে টাইগাররা। তিন ম্যাচ সিরিজে এগিয়ে গেছে ১-০ ব্যবধানে।

এশিয়া কাপে সর্বশেষ দেখায় রোমাঞ্চ জাগানো ম্যাচে আফগানিস্তানকে হারিয়েছিলো বাংলাদেশ। সুপার ফোরে উঠে পরে না পারলেও আফগানদের বিপক্ষে দাপট ঠিকই বজায় থাকল। বারবার রঙ বদলানো ম্যাচেও শেষ হাসি বাংলাদেশের।
আফগানদের ১৫১ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দুর্দান্ত শুরু করেছিল বাংলাদেশ। এশিয়া কাপে ব্যর্থতার ক্ষত মুছে দিতে তানজিদ তামিম ও পারভেজ হোসেন ইমন জুটি শুরু থেকেই আত্মবিশ্বাসী ব্যাটিং করেন। ১১ ওভারে দল পৌঁছে যায় শতরানে, দুই ওপেনারই তুলে নেন অর্ধশতক। স্কোরবোর্ডে কোনো উইকেট না হারিয়েও যখন রান ১০৯, তখনই নেমে আসে বিপর্যয়।

মাত্র আট রানের মধ্যে হারাতে হয় পাঁচ উইকেট, স্কোর দাঁড়ায় ১১৭/৫। আফগানদের ঘুরে দাঁড়ানোর নায়ক ছিলেন রশিদ খান। এরপর তানজিম সাকিবও ফিরলে ১১৮ রানে ছয় উইকেট হারিয়ে দিশেহারা বাংলাদেশকে টেনে তোলেন সোহান ও রিশাদ হোসেন। শেষ দিকে তাদের মারমুখী ব্যাটিং নিশ্চিত করে চার উইকেটের জয়। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে নুরুল হাসান স্পষ্ট করেই বললেন মানসিকতার জায়গাতেই বড় ঘাটতি আছে দলের মধ্যে, ‘আমরা অনেক দিন ধরে ক্রিকেট খেলছি। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ সময়ে কখনও কখনও মানসিকতার কারণেই ব্যর্থ হই। উইকেট একই ছিল, ইমন ও তানজিদ ভালো শুরু দিয়েছিল। হয়তো ভেতরে ভেতরে আমাদের মধ্যে সন্দেহ ঢুকে পড়েছিল, কারণ রশিদ ও নূর আহমেদ দুজনেই বিশ্বমানের স্পিনার। তবে আমি মনে করি, দক্ষতার চেয়ে এই জায়গায় আমাদের মানসিকভাবে উন্নতির অনেক সুযোগ আছে।’

এশিয়া কাপে সমালোচনার মুখেও পড়েছিলেন সোহান। পাকিস্তানের বিপক্ষে পরাজয়ের দায় চাপানো হয়েছিল মূলত ব্যাটিং ব্যর্থতার ঘাড়েই। সেই প্রসঙ্গেও তিনি নিজের অবস্থান পরিষ্কার করলেন, ‘আমার মনে হয়, এশিয়া কাপে আমাদের দারুণ সুযোগ ছিল, যা আমরা কাজে লাগাতে পারিনি। অবশ্যই, সেই অবস্থান থেকে সবসময় ভাবতে হয় কীভাবে ভুলগুলো কমানো যায়। তবে একইসঙ্গে আমি মনে করি, এশিয়া কাপের পর এটা ছিল আমাদের প্রথম ম্যাচ, আর এই ম্যাচ জেতাটা আমাদের জন্য ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ ছিল।’

উল্টো পথে বাগে পেয়েও বাংলাদেশকে হারাতে না পারায় পোড়াচ্ছে রশিদ খানকে। ২৭ বছর বয়সী এ অধিনায়ক মনে করেন প্রথম ইনিংসেই হেরে গেছেন তারা। ২৫ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়া আফগানিস্তান ৪০ রানে হারায় ৪ উইকেট। বলা যায়, পুরো ইনিংসে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়েছে তারা। পঞ্চাশ রানের জুটিও কেউ গড়তে পারেনি, সর্বোচ্চ ৩৩ রানের জুটি গড়েছেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই ও রহমানউল্লাহ গুরবাজ। ব্যাটিং নিয়ে রশিদ বলেন, ‘আমরা খুব সহজেই উইকেট বিলিয়ে দিয়েছি। আশা করি, আমরা শিখতে থাকব এবং আরও উন্নতি করব, কারণ, মূল লক্ষ্য হলো বিশ্বকাপের প্রস্তুতি। ব্যাটসম্যানদের উচিত নিজেদের স্বাভাবিক খেলায় মনোযোগ দেওয়া—সময় নেওয়া যেতে পারে, কিন্তু চাপের মুখে শট বাছাইয়ের ভুলটা হয়ে যায়।’

রশিদ মনে করেন, ম্যাচটা আরও ভালোভাবে শেষ করতে পারত আফগানিস্তান, ‘এখনো মনে হচ্ছে, আমরা আরও ভালোভাবে শেষ করতে পারতাম। টি-টোয়েন্টিতে ছন্দ হারানোর সুযোগ নেই, একবার ছন্দ হারালে তা ফিরিয়ে আনা কঠিন। আমার এটাও মনে হয়, প্রথম ১০ ওভারে আমরা ঠিকঠাক বোলিং করতে পারিনি।’
সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে গতকাল রাতেই ফের মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ। লক্ষ্য একটাই, আরেকটি জয় তুলে নিয়ে সিরিজ নিশ্চিত করা। এতক্ষনে নিশ্চয়ই জেনেও গেছেন কি ঘটেছে ম্যাচের ভাগ্যে!


বিভাগ : খেলাধুলা


মন্তব্য করুন


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ